শুক্রবার, ৬ জুলাই, ২০১২

এ বছরই গোললাইন প্রযুক্তির ব্যবহার

ফুটবলে গোললাইন প্রযুক্তি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছেন নীতি-নির্ধারকেরা। এর মধ্য দিয়ে এই প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে প্রায় এক দশক ধরে চলা বিতর্কের অবসান ঘটল।
জুরিখে গতকাল বৃহস্পতিবার ফিফার কার্যনির্বাহী পরিষদের বৈঠক শেষে ফিফা সভাপতি জেরোম ভালকে সাংবাদিকদের বলেছেন, টোকিওতে অনুষ্ঠেয় ক্লাব বিশ্বকাপ (এ বছরের ডিসেম্বর), কনফেডারেশনস কাপ (২০১৩ সাল) ও ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে গোললাইন প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’
দুই বছর ধরে গোললাইনে প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে যুক্তি-তর্কের লড়াইটা। ২০১০-এর বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে জার্মানির বিপক্ষে ইংল্যান্ডের ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের একটি শট গোললাইনের ভেতরে পড়লেও তা এড়িয়ে গিয়েছিলেন রেফারি। টিভি-রিপ্লেতে দেখা যায়, ওই বলটি স্পষ্টতই গোললাইন অতিক্রম করেছিল। সেই থেকে ফুটবলের প্রযুক্তির ব্যবহারের বিতর্কটা জোরাল হয়।
ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বোর্ড বা আইএফএবি গত মার্চ মাসেই ফুটবলে গোললাইন প্রযুক্তি ব্যবহার নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছিল। তবে তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আরও কিছুটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়। এ জন্য দুটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল গোললাইন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিস্তারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার। একটি ব্রিটিশ ও আরেকটি ডেনিশ-জার্মান প্রতিষ্ঠান এত দিন ধরে গোললাইন প্রযুক্তির ব্যাপারে বিভিন্ন পরীক্ষা চালিয়ে গতকাল ফিফার বৈঠকে চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেশ করে।
নিজেরা ভুক্তভোগী হওয়ার কারণেই বোধহয়, গোললাইন প্রযুক্তির ব্যাপারে সর্বাত্মক সমর্থন আছে ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের। একই সঙ্গে উত্তর আয়ারল্যান্ড, ওয়েলস ও স্কটল্যান্ডও এ ব্যাপারে ইংল্যান্ডের পাশে রয়েছে। ২০১০ সালের বিশ্বকাপের সময় গোললাইন প্রযুক্তি নিয়ে ওঠা বিতর্কের সময় ফিফার সভাপতি ব্যাপারটির বিরুদ্ধাচরণ করলেও সদ্যসমাপ্ত ইউরোয় ইউক্রেন-ইংল্যান্ড ম্যাচের পর গোললাইন প্রযুক্তির পক্ষে কথা বলেন। সেই ম্যাচে ইউক্রেনের একটি গোল রেফারির চোখ এড়িয়ে যাওয়ায় বাতিল হয়ে যায়। গোললাইনের ভেতর থেকেই বল ফিরিয়ে দেন ইংলিশ ডিফেন্ডার জন টেরি। সেই ম্যাচের পর ফিফার সভাপতি বলেছিলেন, ‘আজ রাতের পর থেকে ফুটবলে গোললাইন প্রযুক্তির ব্যবহার আবশ্যিক হয়ে গেল।’
গোললাইন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ফিফার সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী উয়েফা। উয়েফা প্রধান ও ফরাসি ফুটবল কিংবদন্তি মিশেল প্লাতিনিতো কিছুদিন আগে ফুটবলে গোললাইন প্রযুক্তির ব্যবহারের বিরুদ্ধে রীতিমতো হুংকারই দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, গোললাইন প্রযুক্তি ব্যবহার করলে অনেক বিষয়ে জটিলতা বাড়বে। তখন সেসব জটিলতার সমাধান করতে কয়টা প্রযুক্তির ব্যবহার হবে? তিনি আরও বলেছিলেন, ফিফা গোললাইন প্রযুক্তি চালু করলেও তিনি যদি কোনো দিন ফিফার সভাপতি হতে পারেন, তাহলে তিনি তা বাতিল করবেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন