রবিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১২

মঙ্গল গ্রহে খরস্রোতা নদীর চিহ্ন!

2012 09 28 19 43 30 5065fde2243dd untitled 12 মঙ্গল গ্রহে খরস্রোতা নদীর চিহ্ন!
মঙ্গলের বুকে লালচে-বাদামি ধুলায় আবৃত শিলাস্তর
মঙ্গল গ্রহের পাহাড়ি এলাকায় পাথরের কোল ঘেঁষে কয়েক হাজার কোটি বছর আগে বয়ে চলত খরস্রোতা নদী। দীর্ঘদিন ধরে সেই স্রোতে পাথর ক্ষয়ে পরিণত হতো নুড়িতে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (নাসা) মহাকাশযান কিউরিওসিটি মঙ্গলপৃষ্ঠে পানিপ্রবাহের সেই প্রমাণ পেয়েছে। নাসা গত বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে। খবর বিবিসি ও এএফপির।
নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির গবেষকেরা ক্যালিফোর্নিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, কিউরিওসিটি মঙ্গলপৃষ্ঠে যেসব পাথরের সন্ধান পেয়েছে, সেগুলোর বয়স কয়েক শ কোটি বছর বলে অনুমান করা যেতে পারে। সম্ভবত সেখানে দীর্ঘদিন আগে নদীপ্রবাহ ছিল এবং সেই স্রোতে নুড়ি জমা হয়েছে। মঙ্গলপৃষ্ঠে নদীপ্রবাহের চিহ্নসংবলিত নুড়ি বিছানো পথের সন্ধান এটাই প্রথম।
কিউরিওসিটির বিজ্ঞানী রেবেকা উইলিয়ামস বলেন, কিউরিওসিটির পাঠানো ছবিতে পাথরগুলোর আকৃতি দেখে বোঝা যায়, এক জায়গা থেকে অন্যত্র স্রোতে ভেসে যেত। এই আকৃতির পাথর সরিয়ে নেওয়া বাতাসের পক্ষে সম্ভব নয়।
নাসার গবেষকেরা জানান, কিউরিওসিটির পাঠানো ছবিতে মঙ্গলপৃষ্ঠে প্রাচীন একাধিক নদীর সংযোগস্থলের অস্তিত্বের ইঙ্গিত রয়েছে। ছবিতে দৃশ্যমান পাথরগুলো ক্ষয়ে যাওয়ার কারণ সম্ভবত খরস্রোতা নদীর প্রবাহ। কিউরিওসিটি মঙ্গলপৃষ্ঠ থেকে ১০-১৫ সেন্টিমিটার পুরু একটি পাথর তুলে পরীক্ষা করেছে। কানাডার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় একটি লেকের নাম অনুসারে গবেষকেরা ওই পাথরটির নাম দিয়েছেন ‘হোটা’। পাথরটির গায়ে লেগে থাকা কাঁকর বিশ্লেষণ করে পানিপ্রবাহের গতি এবং সংশ্লিষ্ট নদীর উৎসবিষয়ক তথ্য অনুসন্ধানের চেষ্টা চালাবেন বিজ্ঞানীরা।
মঙ্গলপৃষ্ঠে পানির প্রবাহ ছিল বলে গবেষকেরা দীর্ঘদিন ধরেই ধারণা করছিলেন। তাঁরা কৃত্রিম উপগ্রহের সাহায্যে তোলা মঙ্গলের ছবি বিশ্লেষণ করে সেখানে পানির অস্তিত্বের ধারণা করতেন। তবে কিউরিওসিটি সেখানে অবতরণের পর প্রাচীন নুড়ি ও বালু দিয়ে গঠিত পাথরের ছবি তুলে পৃথিবীতে পাঠাতে শুরু করে।
কিউরিওসিটি গত ৬ আগস্ট অবতরণ করে ‘লাল গ্রহের’ পৃষ্ঠে। গবেষকদের ধারণা, সেখানকার পাথর বিশ্লেষণ করে পানির অস্তিত্বের ব্যাপারে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসবাসের সম্ভাব্যতা এবং অতীতে কখনো প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কি না, দুই বছরব্যাপী অভিযানে তা যাচাই করে দেখবে কিউরিওসিটি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন