শনিবার, ২১ জুলাই, ২০১২

চির অদ্ভুত ও ভয়ঙ্কর কিছু বিশ্বয়কর জায়গা

১. বিয়ার লেক আরোরা (Bear Lake Aurora):-
sampad1987 1315675692 1 5399450126 7dcbb62276 ****চির অদ্ভুত ও ভয়ঙ্কর কিছু বিশ্বয়কর জায়গা****
বিয়ার লেক আলাস্কায় অবস্থিত। আর আরোরা বলতে বুঝায় বিয়ার লেকএর আকাশের মনরোম রঙ্গিন আলোর খেলা।এটাকে উত্তরের আলো বা (Northan Light)ও বলা হয়। বিয়ার লেক আরোরা প্রকৃতির এক আশ্চর্য সৃষ্টি। আকাশের এই রঙ্গিন খেলাকে নিয়ে রয়েছে অনেক লোককথা। এর ইতিহাস হাজার বছরের পুরোনো। প্রাচীণ লোককথা থেকে জানা যায়, এই আনিন্দ্য সুন্দর আলোর ঝলকানি সৃষ্টি করেছিলো রোমাস্ন সুর্যদয়ের দেবতা আরোরা (Aurora)। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেযে সুর্যবায়ু সাথে যখন পৃথিবীর চোম্বকক্ষেত্রের সংঘর্ষ ঘটে তখনি এই রহস্যময় আলোর উৎপত্তি হয়। শুধু আলাস্কার বিয়ার লেকই নয়, কানাডা্ ,অস্ট্রেলিয়া সহ মেরু অঞ্ছলের অনেক দেশেই আরোরা দেখা যায়।
2. ঈগলহক নেক (Eaglehawk nack)Tasmania :-

sampad1987 1315676214 5 Tessellated Pavement Sunrise Portrait ****চির অদ্ভুত ও ভয়ঙ্কর কিছু বিশ্বয়কর জায়গা****
প্রকৃতির আরেকটি বিশ্বয় হল তাসমানিয়ার ঈগলহক নেক।এটা অস্ত্রেলীয়ার তাসমানিয়ায় অবস্থিত। ঈগলহক নেক প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্ট খুব সঙ্কির্ন ভুমি বা রাস্তা (Isthmus) যা দুটী আলাদা ভুখন্ড কে এক করেছে। এই ভুখন্ড গুলি হল তাসমানিয়া উপদ্বীপ ও তাসমানিয়া।এই isthmus টি ৪০০ মিটার লম্বা এবং প্রস্থে এর সবচেয়ে সংকির্ন স্থানটি হল ৩০মিটার। স্থানীয় ভাবে এটা “নেক” নামে পরিচিত।ভু-তাত্বীক ও ঐতীহাসীক দুই দিক থেকেই ঈগলহক নেক তাৎপর্যপুর্ন। ব্রিটিস নির্বাসিত বন্দিরা পোর্ট আর্থার কারাগার থেকে পালানোর জন্য ঈগলহক নেক ব্যাবহার করত। তাই এই পালিয়ে যাওয়া রুখতে ১৮৩০ সালেব্রিটিশরা সেখানে ভয়ঙ্কর কিছু কুকুর সেখানে পাহাড়া বসিয়েছিল।আর সেটাই ইতিহাসে বিখ্যাত Dog line নামে পরিচিত। অনেক বন্দিই এই নেক দিয়ে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করেছিল।
ঈগলহক নেক আরো বিখ্যাত ও জনপ্রিয় এর ভৌগলিক পরিবেশের জন্য। ছবিতে আপ্নারা শষ্যক্ষেতের মত যা আপ্নারা দেখতে পাচ্ছেন তা হল প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্ট tessellated pavement(ক্ষয়ের কারনে সৃষ্ট দুর্লভ ভুমিরুপ)।3. শেম্পেন লেক(Champagne lake) :-
sampad1987 1315677365 8 champagne pool10 ****চির অদ্ভুত ও ভয়ঙ্কর কিছু বিশ্বয়কর জায়গা****
না বন্ধুরা, এটা শেম্পেন দিয়ে ভরপুর কোনো লেক না। এটা কে বলা যায় প্রকৃতির এক বিশ্বয়কর সৃষ্টি।এই লেকটি নিউজিল্যান্ডএর Wai-O-Tapu te অবস্থিত। Wai-O-Tapu জায়গা টি আবার রুটুরুয়া(roturua) তে অবস্থিত। মাউরি ভাষা থেকে অনুবাদ করলে জানা যায় Wai-O-Tapu এর অর্থ হল পবিত্র বা রঙ্গিন পানি আর রুতুরুয়া এর অর্থ হল কাহুমাতামোমিও(kahomatamomoe) এর মহান লেক, যে ছিল লর্ড মরিওর চাচা যিনি এই অঞ্চলটি আবিষ্কার করেছিলেন।শুধু শেম্পেন লেকই নয় তার আসপাশ পুরো এলাকাটিই আরো অনেক প্রাকৃতিক বৈশিষ্টে পরিপুর্ণ।পুরো রুটুরুরা অঞ্চলটিই তিব্র ভাবে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি,পানি ও বাষ্প, ও আরো বহু অদ্ভুত প্রাকৃতিক বৈশিষ্টে গঠিত ও পরিপুর্ণ। ছবিতে কমলা রঙের তাকের মত যেই অংশ টি দেখা যাচ্ছে এটা হল গ্রাফাইটের ভান্ডার এবং শেম্পেন এর মত বুদবুদ আকারে যেই গ্যাস উঠছে তা হল কার্বনডাই অক্সাইড।4. খুনী হ্রদ (killer lake ) কেমেরুন :-
sampad1987 1315677551 12 Nyos Lake ****চির অদ্ভুত ও ভয়ঙ্কর কিছু বিশ্বয়কর জায়গা****
প্রকৃতি আমাদের পৃথিবী কে দিয়েছে অপুর্ব সুন্দর কিছু জায়গা ঠিক তেমনি দিয়েছে ভয়ঙ্কর কিছু জায়গা। আর সেই রকম একটি জায়গা হল মৃত্যু হ্রদ বা killer lake. এটি camaroon এ অবস্থিত।এর আসল নাম Nyos হলেও স্থানীয় ভাবে এটি খুনী হ্রদ নামেই পরিচিত।এটি একটি মৃত আগ্নেয়গিড়ির জ্বালামুখে অবস্থিত। এটি লাভায় পরিপুর্ন থাকলেও এর উপরে রয়েছে গভীর পানি আর এর মধ্য দিয়ে ধিরে ধিরে নির্গত হচ্ছে কার্বনডাই-অক্সাইড। পর্বতের এই অংশ টি ওক পর্বতমালার অন্তর্গত যা ক্যামেরুন এর উত্তর পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত।এটার নাম মৃত্যু হ্রদ কারন ১৯৮৬ সালের দিকে এর থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইডের এক সুবিশাল বুদ্বুদ বের হয় যা সালফার এবং হাইড্রোজেন সঙ্গে মিশে বায়ুমন্ডলে মিশে যায়।সর্বমোট ১.৬ টন পরিমান এই গ্যাস চারিদিকে ছড়িয়ে যায়।এর বিস্তারের পরিমান ছিল কেন্দ্র থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার। আর এই বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে দুই ঘন্টায় প্রায় ১৭০০ জন মানুষ ও ৩৫০০ গবাদী পশু মারা যায়।যারা বেচে ছিল তাদেরকেও দির্ঘমেয়াদি কষ্টকর পার্শপ্রতিক্রিয়া যেমন ক্ষত, টিস্যু পোড়া এবং শ্বাসযন্ত্রের অসুস্থতা প্রভৃতিতে ভুগতে হয়েছিল।5. শ্বেত মরুভুমি(The white desert)মিশরঃ- 
sampad1987 1315677458 10 p10106042 1024x768 ****চির অদ্ভুত ও ভয়ঙ্কর কিছু বিশ্বয়কর জায়গা****
সম্ভবত হিন্দি ছবি “কাভি খুশি কাভি গাম” এর একটা গানে আমি সর্বপ্রথম শ্বেত মরুভুমি বা The white desert দেখি। যখন দেখি তখন মনে হয়েছিল এটা অবাস্তব। কারন মরুভুমি আবার সাদা কিভাবে হয়! কিন্তু যখন The white desert সম্পর্কে যানতে পারি তখন আর বিস্বয়ের সীমা থাকলনা।
চোখ ধাধানো সাদা এই মরুভুমির এতিহাস থেকে জানা যায় যে ঐতিহাসীক যুগের পুর্বে সাহারা মরুভুমি যখন পানির নিছে ডুবে ছিল তখন তার একটি অংশে খরিমাটি জমতে থাকে।আস্তে আস্তে যখন এই জায়গা টি সমুদ্রপৃষ্টের উপরে চলে আসে তখন জমেথাকা খরিমাটির ভান্ডার সাহারা মরুভুমির মাঝে অপুর্ব সুন্দর এই শ্বেত মরুভুমির সৃষ্টি করে।মিসরের ফারাফ্রা মরুদ্যানের এই অঞ্ছলটি তাই তাই প্রকৃতির এক অপুর্ব সৃষ্টি। এটী ফারাফ্রা অঞ্চলের ৪৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। তার পাশে রয়েছে ব্লাক ডেসার্ট ও ক্রিস্টাল মাউন্টেইন। 6. পামুক্কালা (pamukkala)তুরস্কঃ-
sampad1987 1315675789 3 Denizli  Pamukkale Turkey 1281434031 www.brodyaga.com   1  ****চির অদ্ভুত ও ভয়ঙ্কর কিছু বিশ্বয়কর জায়গা****
বন্ধুরা আশাকরছি ছবি দেখে আপ্নারাও আমার মত একে বরফের পাহাড় বলেভুল করেছেন ।আসলে বরফ নয় এই পাহার বা ঝর্না সৃষ্টি হয়েছে স্ফটিকের মত ক্যালসিয়াম থেকে। তুর্কি ভাষা থেকে অনুবাদ করলে পামুক্কালা(pamukkala) অর্থ দাঁড়ায় তুলো।হাজার বছর আগে থেকে এখন পর্জন্ত এর সৌন্দর্জ মানুষকে পুলকিত করে আসছে। ইতিহাস থেকে জানা যায়।, পামুক্কালা সৃষ্টি হয়েছিল প্রায় ১০০০ বছর আগে।১০০০ বছর আগে তুরুস্কের দিঞ্জিল অঞ্ছলে একটি শক্তিশালী ভুমিকম্প সংঠিত হয়। এর ফলে মাটিতে ফাটলের সৃষ্টি হয়ে ঝর্নার মাধ্যমে বেড়িয়ে আসে ক্যলসিয়াম সমৃধ্ব পানি। তারপর যুগে যুগে এই ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ পানি প্রবাহের মাধ্যমে ধাপে ধাপে সৃষ্টী হয় অনিন্দ সুন্দর শ্বেত ঝর্নার পাহাড়। অনেকে এই ঝর্ণায় গোসল করে নিজেদের ধন্য মনে করে। পরবর্তিতে রোমানরা এই পাহাড়ের উপরে শহর নির্ম্নান করে যার নাম ছিল হাইরাপলিস(Heirapolis)।এর অর্থ হল পবিত্র শহর। 7. নরকের দরজা (Door to Hell) তুর্কমেনিস্তান :-
sampad1987 1315677792 15 The Door To Hell 2 ****চির অদ্ভুত ও ভয়ঙ্কর কিছু বিশ্বয়কর জায়গা****
নরকের দরজা বা জাহান্নামের দরজা যাই বলি না কেন, নামটা কিন্তু আসলেই ভয়ঙ্কর। আর এই ভয়ঙ্কর জায়গা টি দেখতে হলে যেতে হবে তুর্কমেনিস্তানে।তুর্কমেনিস্তানের কারা-কুম মরুভুমির দারভাযা গ্রামের পাশে অবস্থিত এই ভয়ঙ্কর স্থানটির ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় যে , ১৯৭১ সালের দিকে তৎকালীন সভিয়েত ইউনিনের টি কম্পানি এখানে গ্যাস ক্ষেত্র অনুসন্ধানের জন্য খনন কার্য চালায়। তা যেই ঘটনাটা আমাদের মাগুরছরা বা টেংরাটিলায় ঘটেছিল সেই একই ঘটনাটা এখানে ঘটল। বিশাল বিষ্ফোরন। গ্যাসক্ষেত্রটি বন্ধ হয়ে যায়। আর রেখে যায় বিশাল আগুনে ভরা গর্ত। এই গর্ত থেকে ক্রমাগতভাবে বের হচ্ছে মিথেন গ্যাস আর তার থেকে আগুন। এই আগুনের তাপ এতই যে তার পাশে ২ মিনিটের বেশি দাড়ানো যায় না।সেই থেকে এর নাম নরকের দরজা। 8:- সুকাত্রা দ্বীপ (Suqatra Island) ইয়েমেন ঃ-
sampad1987 1315675734 2 3656tertwettry ****চির অদ্ভুত ও ভয়ঙ্কর কিছু বিশ্বয়কর জায়গা****
প্রকৃতির আরেকটি আজব সৃস্টি হল সুকাত্রা দ্বীপ। এটিকে দেখতে হলে যেতে হবে ইয়েমেনে।বর্তমান পৃথিবীর থেকে বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপ টি মানুষের কাছে এখনো অজানা। যাইহোক দ্বীপ হিসেবে সুকাত্রা যতটুকু আকর্ষনীয় তার চেয়ে আকর্ষনীয় এই দ্বীপের গাছপালা। ১২০ কিলোমিটার লম্বা এবং ৪০কিলোমিটার প্রস্থের এই দ্বীপটির গাছগুলোই এই দ্বীপকে পৃথিবীর অন্য অংশ থেকে পৃথক করেছে। এখানে রয়েছে এমন সব আকৃতির গাছপালা যেগুলো দেখতে আসলেই অদ্ভুত। এই অদ্ভুত গাছগুলোর মদ্ধে অন্নতম হল ড্রাগন ব্লাড ট্রি। ঠিক ছাতার মত দেখতে এই গাছের রস দিয়ে রাবার বানানো হয়।আরেকটি গাছের নাম হল desert rose বা মরুভুমির গোলাপ। তবে এর আরেকটি জনপ্রিয় নাম রয়েছে, এটাকে স্থানীয় ভাবে হাতির পা গাছ বলা হয়।এর কারন তার আকৃতি। এছারাও এই দ্বীপে প্রায় ৭০০ রকমের গাছপালা রয়েছে যেগুলো খুবই দুর্লভ। এই দ্বীপের আবহাওয়া প্রচন্দ গরম এবং শুস্ক ।এই দ্বীপটিকে ২০০৮ সালে বিশ্বঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।9 :- রেসট্রাক প্লায়া(racetrack playa):-
sampad1987 1315676640 6 760733 dos rocas y rastros del theie en el racetrack playa en el parque nacional del valle de muerte califo ****চির অদ্ভুত ও ভয়ঙ্কর কিছু বিশ্বয়কর জায়গা****
যারা আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া আঙ্গরাজ্যে বসবাস করেন তাদের কাছে এই জায়গা টি পরিচিত হতেপারে।রেসট্রাক প্লায়া নামক রহস্যময় জায়গা টী ক্যালিফোর্নিয়ার মৃত্যু উপত্যকায় অবস্থিত। এটিকে আমি সবচেয়ে আশ্চর্য বলব কারন সয়ং আমেরিকা্ন্রাই কাছে এই স্থানের রহস্য বের করতে পারেনি।এই জায়গা টিকে পৃথিবীর সবচেয়ে সমতল ভুমি বলা হয়। তার সবচেয়ে অদ্ভুত ও রহস্যজনক ব্যাপারটি হল এর ভাসমান পাথর। ছবিতে নিশ্চয় আপ্নারা ভাসমান পাথরগুলাকে দেখতে পারছেন। মজার ব্যাপার হল যে কিভাবে এই পাথরগুলোএইভাবে ভেসে ভেসে এসেছে তার কোনো ডকুমেন্ট বা ভিডিও কারো কাছে নেই । নেই বলতে নেটে কোথাও পাইনি। এই ভেসে বেড়ানোর কারন হিসাবে বলা হচ্ছে বায়ু প্রবাহ। শীতকালে যখন এই মরুভুমিতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় তখন racetrack playa প্রচুর পিচ্ছিল হয়ে যায়। তখন প্রবল বায়ু প্রবাহের ফলে পাথর গুলো এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় স্থানান্তর করে।
10 :- ডনজুয়ান হ্রদ(Don Juan pond)এন্টার্কটিকাঃ-
sampad1987 1315675950 4 IMG 3612 ****চির অদ্ভুত ও ভয়ঙ্কর কিছু বিশ্বয়কর জায়গা****
বলুনত পৃথিবীর সবচেয়ে লবনাক্ত হ্রদ কোনটি? নিশ্চয় বলবেন dead sea. কিন্তু না। পৃথিবীর সবচেয়ে লবনাক্ত হ্রদ টির নাম ডন জুয়ান হ্রদ। এটি এন্টার্কটিকায় অবস্থিত। এই হ্রদের লবনাক্ততার ঘনত্ব এত যে ,এন্টার্কটিকায় যখন তাপমাত্রা ৩০ডিগ্রির নিচে থাকে তখন এর পানি বরফ হয়না। এই হ্রদের পানির লবনাক্ততার পরিমামান ৪০%।যা সমুদ্রের সমুদ্রের পানির চেয়ে ১৮ গুন বেশি।যেখানে dead sea হ্রদের পানি সমুদ্রের পানির চেয়ে ৮ গুন বেশি লবনাক্ত। এই হ্রদের নামকরন করা হয়েছে দুই জন পাইলটের নামানুসারে যারা ১৯৮১সালে এটিকে আবিষ্কার করেছে। তারা হলেন don roy আর john Hickey।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন