ব্লুটুথ (Bluetooth) ক্ষুদ্র
পাল্লার জন্য প্রণীত একটি ওয়্যারলেস প্রোটোকল। এটি ১-১০০ মিটার দূরত্বের
মধ্যে ওয়্যারলেস যোগাযোগের একটি পদ্ধতি। ব্লুটুথ-এর কার্যকরী পাল্লা হচ্ছে
১০ মিটার। তবে বিদ্যুৎ কোষের শক্তি বৃদ্ধি করে এর পাল্লা ১০০ মিটার
পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যেতে পারে। ব্লুটুথ ২.৪৫ গিগাহার্টজ-এ কাজ করে। ৯০০
খ্রীস্টাব্দের পরবর্তী সময়ের ডেনমার্কের রাজা Harald Bluetooth-এর
নামানুসারে এই প্রযুক্তির নামকরণ করা হয়েছে। ব্লুটুথ ১.০-এর তথ্য
আদান-প্রদান-এর সর্বোচ্চ গতি ছিল সেকেন্ডে ১ মেগাবিট। বর্তমানে ব্লুটুথ
২.০-এর সর্বোচ্চ গতি হল সেকেন্ডে ৩ মেগাবিট।

ব্লুটুথ প্রোটোকল বাস্তবায়নকারী যন্ত্রাংশ বা ডিভাইসগুলি দ্বিমুখী
সংযোগ স্থাপন করে কাজ করে। বর্তমানে কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, গেমিং কনসোল,
ডিজিটাল ক্যামেরা, প্রিন্টার, ল্যাপটপ, জিপিএস রিসিভার প্রভৃতি যন্ত্রাদিতে
ব্লুটুথ প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। এই প্রযুক্তিতে খুব কম বিদ্যুৎ খরচ হয়।
এটি ক্ষুদ্র পাল্লার বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়।
কিভাবে কাজ করে
ব্লুটুথ প্রযুক্তিতে কম ক্ষমতা বিশিষ্ট
বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে তথ্য পাঠানো হয়। এই যোগাযোগ ব্যাবস্থায় ২.৪৫
গিগাহার্ট্জ (প্রকৃতপক্ষে ২.৪০২ থেকে ২.৪৮০ গিগাহার্ট্জ-এর মধ্যে)-এর
কম্পাংক ব্যাবহৃত হয়। শিল্প, বিজ্ঞান এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যাবহৃত
যন্ত্রের জন্য উপরিউক্ত কম্পাংকের সীমাটি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এখন
প্রশ্ন হল যে ব্লুটুথ অন্যান্য তরঙ্গ নির্ভর যন্ত্রের কার্যক্রমে বাধার
সৃষ্টি করে কিনা? উত্তর হল “না”। কারণ ব্লুটুথ কর্তৃক প্রেরিত সিগন্যালের
ক্ষমতা থাকে মাত্র ১ মিলিওয়াট, যেখানে সেল ফোন ৩ ওয়াট পর্যন্ত সিগন্যাল
প্রেরণ করে। অর্থাৎ ব্লুটুথের নিম্ন ক্ষমতার সিগন্যাল উচ্চ ক্ষমতার
সিগন্যালে কোন ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে না।
ব্লুটুথ একসাথে ৮টি যন্ত্রের মধ্যে যোগাযোগ
সাধন করতে পারে।তবে প্রত্যেকটি যন্ত্রকে ১০ মিটার ব্যাসার্ধের একই বৃত্তের
মধ্যে অবস্থিত হতে হয়, কারণ ব্লুটুথ প্রযুক্তি চারিদিকে সর্বোচ্চ ১০
মিটার পর্যন্ত ক্রিয়াশীল থাকে।এখন প্রশ্ন যে, A যন্ত্রের সাথে B যন্ত্রের
যোগাযোগের সময় কাছাকাছি অবস্থিত অপর দুটি যন্ত্র C ও D-এর মধ্যের ব্লুটুথ
যোগাযোগ ব্যাবস্থা বাধাগ্রস্থ হয় কিনা?(কেননা দুই যন্ত্রযুগলই একই
কম্পাঙ্কের ব্লুটুথ প্রযুক্তি ব্যাবহার করছে)উত্তর হল “না”। কারণ এই সমস্যা
সমাধানের জন্য ব্লুটুথ একটি পদ্ধতি ব্যাবহার করে যা কিনা “spread-spectrum
frequency hopping” নামে পরিচিত। এই পদ্ধতিতে একই সময়ে একাধিক যন্ত্রযুগল
একই কম্পাঙ্ক ব্যাবহার করে না।ফলে একে অপরের যোগাযোগ ব্যাবস্থাতে বাধার
সৃষ্টি করে না। এ পদ্ধতিতে কোন একটা যন্ত্র নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে অবস্থিত
কম্পাঙ্ক হতে ৭৯ টি পৃথক পৃথক কম্পাঙ্ক এলোমেলোভাবে গ্রহণ করে ও একের পর এক
পরিবর্তন করে। ব্লুটুথের ক্ষেত্রে, ট্রান্সমিটার প্রতি সেকেন্ডে ১৬০০ বার
কম্পাঙ্ক পরিবর্তন করে।ফলে একাধিক ভিন্ন ভিন্ন যন্ত্রযুগলের মধ্যে একই
সময়ে একই কম্পাঙ্ক-এর তথ্য প্রেরণ অসম্ভব বললেই চলে।

Class | সর্বোচ্চ অনুমোদিত হ্মমতা | সীমা (আনুমানিক) |
|
---|---|---|---|
মিলিওয়াট (mW) | ডেসিবেল (dBm) | ||
প্রথম শ্রেণী | ১০০ mW | ২০ dBm | ~১০০ মিটার |
দ্বিতীয় শ্রেণী | ২.৫ mW | ৪ dBm | ~১০ মিটার |
তৃতীয় শ্রেণী | ১ mW | ০ dBm | ~১ মিটার |
বেশির ভাগ হ্মেত্রে দ্বিতীয় শ্রেণীর ডিভাইসের কার্যকরী সীমা
সর্বাপেক্ষা ঘটনেতে প্রসারিত করা হয় যদি তারা প্রথম শ্রেণীর transceiver
তে সংযোগ করে, একটি নিখাদ দ্বিতীয় শ্রেণীর নেটওয়ার্কে তুলনা করেছে। এইটি
উচ্চতর সুবেদিতার দ্বারা সম্পন্ন করা হয় এবং প্রথম শ্রেণীর ডিভাইসের
প্রেরণ অধিকারী।
সংষ্করণ | তথ্য হার |
---|---|
সংষ্করণ ১.২ | ১ Mbit/s |
সংষ্করণ ২.০ + EDR | ৩ Mbit/s |
তথ্য সংগ্রহঃ ওয়িকিপেডিয়া এবং গুগল
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন